ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই নতুন বার্তা দিলেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী

ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই নতুন বার্তা দিলেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী

গাজায় সংঘাত থামাতে ইসরাইলের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ ফের শুরু করতে চাপ দিচ্ছে বিশ্ব। এর মধ্যেই ফিলিস্তিনের প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, সরকারি পরিষেবাসহ সার্বিক সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলের অধিকৃত এই ভূখণ্ডের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোস্তফা। 

পশ্চিম তীরের প্রশাসনিক রাজধানী রামাল্লায় নিজ কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, প্রশাসনিক দুর্নীতি প্রতিরোধ, বিচার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সরকারি প্রশাসনে চাকরিরত কর্মকর্তা-কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো জরুরি পরিষেবা খাতের উন্নয়ন এবং ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে তার নেতৃত্বাধীন সরকার শিগগিরই নতুন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। খবর রয়টার্সের।

গাজা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম—তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বর্তমানে সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ক্ষমতাসীন রয়েছে রাজনৈতিক দল ফাতাহের নেতৃত্বাধীন জোট ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি-পিএ)। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পিএ জোটকেই ফিলিস্তিনের বৈধ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

পিএ জোট সরকারের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গত ১৫ মার্চ মোহাম্মদ মোস্তফাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। তার আগে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মোহাম্মদ শাতায়েহ। 

গাজায় ইসলাইলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ইসরাইল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ শুরুর জন্য যে প্রতিনিধি দল গঠন করেছে ফিলিস্তিনের সরকার, তার নেতৃত্বে রয়েছেন শাতায়েহ। মূলত এ কারণেই তাকেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার যে সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন মোহাম্মদ মোস্তফা, সেই ঘোষণা এর আগে তার পূর্বসূরি শাতায়েহও দিয়েছিলেন।

২০০৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজায় ক্ষমতাসীন হয় হামাস। ক্ষমতা নেওয়ার পর পিএ জোটকে ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদ করে গোষ্ঠীটি।

তবে ফিলিস্তিনে জনপ্রিয় হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হামাসের তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা বিশ্বের অধিকাংশ দেশ হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। 

মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দেশগুলো এখনো হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা না করলেও অধিকাংশ দেশ সব সময় এই গোষ্ঠীটির সংশ্রব থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে।
৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের হামলা এবং তার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর শুরু হওয়া অভিযান ফিলিস্তিন-ইসরাইল ইস্যু সংক্রান্ত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদল ঘটিয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব চায়, গাজা থেকে হামাস উচ্ছেদ হোক এবং সেখানে ফের পিএ সরকার ক্ষমতাসীন হোক।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অবশ্য এতে আপত্তি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে একাধিকবার তিনি বলেছেন, গাজার প্রশাসন পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা বর্তমান পিএ জোটের নেই।

তার এই কথা পুরোপুরি ভুলও নয়। গত দুই বছর ধরে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে পশ্চিম তীরের পিএ জোট। এমনকি সেখানকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাভাবিক বেতনও দিতে পারছে না সরকার।

এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে গত ৭ অক্টোবরের সংঘাত শুরুর পর থেকে। হামাসকে গোপনে সহযোগিতা করছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ— অভিযোগ তুলে পিএ জোটের ওপর বেশ কিছু আর্থিক বিধিনিষেধ জারি করেছে ইসরাইল।

পার্লামেন্টে বিল পাশ; অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য দুঃসংবাদ দিল যুক্তরাজ্য পরবর্তী

পার্লামেন্টে বিল পাশ; অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য দুঃসংবাদ দিল যুক্তরাজ্য

কমেন্ট