গুমের বিরুদ্ধে আইন করায় সরকারের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই : আইন উপদেষ্টা
বন্যার পানিতে স্কুলছাত্র নিখোঁজ, ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে কৃতিত্ব চাকমা নামে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। সে বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের মধ্যম বাঘাইছড়ি গ্রামের মিলটন চাকমার ছেলে। কৃতিত্ব মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হলেও গত ১৮ ঘণ্টায় তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বাঘাইছড়ি উপজেলার প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ডুবে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এতে গত ৩৬ ঘণ্টায় যানবাহন চলাচল সচল হয়নি বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাঘাইছড়ি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নারিকেল বাগান এলাকায় সহপাঠীদের সঙ্গে রাস্তা থেকে বন্যার পানি দেখতে যায় কৃতিত্ব চাকমা। এ সময় হঠাৎ পা পিছলে পানিতে পড়ে গেলে স্রোতে ভেসে তলিয়ে যায় সে।
বাঘাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শান্তি বিকাশ চাকমা ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও নিখোঁজের সন্ধান মেলেনি।
মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এসব বিষয়ে স্থানীয় সবার প্রতি অধিক সচেতন থাকার অনুরোধ জানান বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি উপজেলা ও পৌরসভার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। বাঘাইছড়ির কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা সদর ও পৌরসভার মাস্টারপাড়া, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, লাইল্যা ঘোনা, এফ ব্লক, উগলছড়ি ও পুরাতন মারিশ্যা গ্রামসহ উপজেলার বঙ্গলতলী, রুপকারী, মারিশ্যা, বাঘাইছড়ি, খেদারমারা, সাজেক, বাঘাইহাট, সারোয়াতলী ও আমতলী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকায় বহু ফসলি জমি তলিয়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
সাজেক ইউনিয়নের মাচালং ও বাঘাইহাট এলাকায় সড়কের অংশবিশেষ তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানি কমে না যাওয়ায় গত ৩৬ ঘণ্টায় যানবাহন চলাচল সচল হয়নি। ফলে সাজেক পর্যটন এলাকায় যাওয়া শতাধিক পর্যটক এখনো আটকা আছেন বলে জানা গেছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যার পানি এখনো পুরোদমে কমতে শুরু করেনি। দুর্গত লোকজনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে এ পর্যন্ত প্রায় হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রিত লোকজনের মাঝে শুকনো খাবারসহ জরুরি ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
কমেন্ট