রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ রুটের যাত্রীরা। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে। বিকল্প হিসেবে কিছু অটোরিকশা ও সিএনজি চললেও ভাড়া গুনতে হচ্ছে বাসের তুলনায় কয়েকগুণ।


গত ৩ দিন ধরে শ্রমিকদের দ্বন্দ্বের জেরে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে এ বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। জিম্মি হয়ে গেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

 
রাজশাহীর বাস শ্রমিকরা জানান, নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা সড়কে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন।


গত রবিবার (২৭ অক্টোবর) চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিন শ্রমিককে মারধর করা হয়। পরিবহনের লোকজনই এমনটা করেছে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের লোকজনকে রাজশাহীর বাস শ্রমিকরা মেরে আহত করেছে। ফলে তারাও বাস চলাচল শুরু করতে নারাজ।

তবে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ‘উভয়পক্ষের আলোচনা হয়েছে। আশা করি দ্রুত বাস চলাচল শুরু হবে।’

এদিকে বাস বন্ধের ঘটনায় বিকল্প বাহন হিসেবে সিএনজি, অটোরিকশা ও লেগুনা চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এ জন্য তাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।

 
আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নগরীর রেলগেট, শিরোইল ও রেলস্টেশন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাতে ব্যাগ নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী যাত্রীরা। অন্য রুটের বাস আসলেও তাতে ওঠার চেষ্টা করছেন। তবে জানার পর সেই বাসের গেট থেকে ফিরে আসছেন। পরে সিএনজি, অটোরিকশা ও লেগুনায় করে রওনা দিচ্ছেন তারা। দুর্ভোগ ও ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

নাটোরের সাহেব আলী একটি এনজিওতে চাকরি করেন। রাজশাহী থেকে মাঝেমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে হয় তার। কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাস বন্ধ, এই সময়ে ট্রেনও নাই। বাধ্য হয়ে সিএনজিতে উঠলাম। কিন্তু ভাড়া বেশি।’

পেশায় রাজমিস্ত্রি মো. আলমও প্রায় যাতায়াত করেন এ রুটে। সিএনজিতে উঠে তিনি বলেন, ‘ভাড়া বেশি দিয়ে যাচ্ছি। আমরা আসলে জিম্মি হয়ে গেছি। প্রতিবাদ করলেও সমস্যা।

 
বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তিতুমির নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘দুর্ভোগ হচ্ছে আমাদের। বাস চালু থাকলে এরকম হত না।’

আব্দুল কুদ্দুস নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘চাঁপাই যাওয়া লাইগবে। ভাড়া মিটাইনি। লেগুনাত উঠ্যা গেলছি। যা লিবে, দিয়্যা যাওয়া লাইগবে।’

সিএনজি চালকরা জানান, কম সিটের গাড়ি হওয়ায় ভাড়া পুষিয়ে নিতে বাসের চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন তারা। একদিনে ৪/৫ ট্রিপ করে যাতায়াত করতে পারছেন। বাস বন্ধ থাকার অনেকটা সুবিধা হয়েছে তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন, ভালোই হয়েছে। ওরা (বাস শ্রমিক) গণ্ডগোল করুক, আমরা ভাড়া মারি। অন্য সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিশ্বরোড থেকে শিবগঞ্জ, কানসাট, মনাকসা রুটে ভাড়া মারতাম। কয়দিন থেকে রাজশাহী থেকে ভাড়া মারছি। ভালোই যাত্রী পাচ্ছি, আয়ও ভালো হচ্ছে।

 
আশরাফুল ইসলাম নামে এক সিএনজি চালক বলেন, ‘শিবগঞ্জ থেকে আমরা ৩০ জনের মতো এসেছি। তিনদিন থেকে ভালাই ইনকাম হচ্ছে। দিনে দুই ট্রিপ হচ্ছে আমার, কেউ কেউ ৪/৫ ট্রিপ মারছে।’

ড্যানি ইসলাম নামে রাজশাহী নগরীর এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘কয়দিন থেকে টানা ভাড়া পাচ্ছি, তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ ট্রিপ মারছি। ৮ জন করে লোক নিতে পারছি আমরা। তবে কোনো বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি না। অটোরিকশায় ১০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছি।’

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাসভাড়া কমানোর আলটিমেটাম পরবর্তী

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাসভাড়া কমানোর আলটিমেটাম

কমেন্ট