স্ত্রী-পুত্রের সামনে স্টেশন মাস্টারের ওপর দুর্বৃত্তের হামলা
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. খলিলুর রহমানকে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হন তার স্ত্রীও।
এ ঘটনায় ওই স্টেশন থেকে এক ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যায় এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানা পুলিশ ও আহত স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্টেশন মাস্টার খলিলুর রহমান সম্প্রতি কুলিয়ারচর থেকে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে বদলি হন। এর আগে পরিবার নিয়ে ভৈরবে থাকতেন তিনি। সকালে স্ত্রী, পুত্রসহ এগারসিন্দুর ট্রেনে কিশোরগঞ্জে আসেন তিনি।
স্টেশনে নামার পরই দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন তিনি।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি লিটন মিয়া জানান, ভৈরব থেকে ‘খ’ বগিতে উঠেন তারা। এ সময় ওই বগিতে থাকা এক তরুণী তারা টিকিট করেছে কি না, জানতে চান। তখন স্টেশন মাস্টারের স্ত্রী তার স্বামী রেলের স্টাফ পরিচয় দিয়ে তাদের কাছে একটি টিকিট আছে বলে জানান।
ভৈরব থেকে তিনটি টিকিট একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। আর দুটি টিকেট সামনের স্টেশন কুলিয়ারচর স্টেশন থেকে সংগ্রহ করা হবে। এসব নিয়ে ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে তাদের তর্ক-বিতর্ক হয়।
ওসি জানান, ওই নারী যাত্রীর বাসা কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের পাশে। তার নাম টুশি।
ওই যাত্রী তার ভাই অন্তুকে ফোনে জানান, এক ব্যক্তি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে। তিনি কয়েকজনকে নিয়ে স্টেশনে থাকেন। ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ স্টেশনে থামা মাত্রই তারা স্টেশন মাস্টারকে বগি থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ আহত স্টেশন মাস্টারকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
স্টেশন মাস্টারের স্ত্রী বাজিতপুরের মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উম্মুল সায়খা দিতি জানান, স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনি নিজেও মারধরের শিকার হয়েছেন। এ সময় তার গলা থেকে একটি সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। তার স্বামীর মোবাইল ফোনসেটটিও ভেঙে ফেলে তারা।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্টেশন মাস্টার শঙ্কামুক্ত হলেও তিনি গুরুতর আহত। গলাসহ সারা শরীরে আঘাতের দাগ দেখা গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করবেন জানিয়ে আহত খলিলুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে।
রেলস্টেশনের কর্মচারীরা জানান, খলিলুর রহমান ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। তিনি হালার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় স্টেশনে দায়িত্বরত কোনো মাস্টার ছিলেন না। ঘণ্টাখানেক পরে কর্তৃপক্ষ আরেকজনকে মাস্টারের দায়িত্ব দিয়ে স্টেশনে পাঠায়। এসব কারণে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে ঘণ্টাখানেক দেরি হয়। পরে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যায়।
কমেন্ট