দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে: প্রধান উপদেষ্টা
যৌতুকের জন্য গৃহবধূর মুখে বিষ ঢেলে দিল স্বামী!
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় যৌতুকের জন্য রুমা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে মারধরের পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী, দেবর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। আহত ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় গত শনিবার (২৪ জুলাই) রাতে রুমা বেগম বাদী হয়ে স্বামী, দেবর ও শাশুড়ির নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত বুধবার (২১ জুলাই) মধ্যরাতে উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন- হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর গোতামারী এলাকার মৃত নুর ইসলামের ছেলে ও গৃহবধূর স্বামী আতাউর রহমান (৩০), আতাউর রহমানের ভাই মোতাহার হোসেন (২৮) ও মা আঞ্জুয়ারা বেগম।
আহত ওই গৃহবধূ উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্না এলাকার মৃত রুহুল আমিনের মেয়ে।
জানা গেছে, এক বছর আগে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের বিনিময়ে আতাউর রহমানের সাথে বিয়ে হয় রুমার। বিয়ের ৪ মাস পর আতাউর রুমাকে নিয়ে চট্টগ্রামে চলে যান। আর সেখানে কারণে-অকারণে রুমাকে নির্যাতন করতেন তিনি।
ঈদ করতে বাড়িতে আসেন রুমা ও আতাউর। বাড়িতে এসে যৌতুকের টাকার জন্য রুমাকে চাপ দেন আতাউর। বাবার বাড়িতে থেকে টাকা আনতে না চাওয়ায় নির্যাতন শুরু হয় রুমার সাথে। স্বামী, দেবর ও শাশুড়ি মিলে রুমাকে শুরু করেন মারধর। এর এক পর্যায়ে শাশুড়ি ও দেবরের সহযোগিতায় স্বামী আতাউর রুমার মুখে বিষ ঢেলে দেন। রুমার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তার পরিবারকে খবর দেন। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন রুমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
আজ রবিবার (২৫ জুলাই) সকালে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, তিন দিন ধরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা মারধরের শিকার রুমা বেগম যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। বাম পাশের চোখ ফুলে গেছে। ফলে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। এছাড়া গলায় ও ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যাথা হচ্ছে তার।
এ সময় রুমা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামী, দেবর ও শাশুড়ি আমাকে হত্যা করার জন্য মুখে বিষ ঢেলে দেয়। অল্পের জন্য আমি বেঁচে গেছি। থানায় অভিযোগ করেছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে আতাউর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত তিন দিন ধরে রুমা বেগমকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। তবে এখনো সুস্থ হয়নি। চোখে আঘাত পাওয়ায় ফুলে গেছে, গলায় ও ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যাথা হচ্ছে। ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমেন্ট