চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপেক্ষ  প্রথম আঘাত হেনেছিলেন  পাকিস্তান পেসার শাহিন আফ্রিদি। ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা আফ্রিদি পাকিস্তানি বোলিং কারখানার নতুন বাঁহাতি সংস্করণ। গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ২১ রানে নিয়েছেন ১ উইকেট। ওয়াসিম আকরাম থেকে শুরু করে মোহাম্মদ আমিরসহ সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ওয়াহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ ইরফানরা। আর এবারের বিশ্বকাপে আগ্রাসী বোলিংয়ের মাধ্যমে ওই তালিকায় তারকা দ্যুতি ছড়িয়ে আবির্ভুত হলেন শাহিন আফ্রিদি।

১০ নম্বর জার্সি পড়ে পাকিস্তানের সাদা বলের আইকনিক তারকা হিসেবে ২১ বছর বয়সী এই তারকার  অসাধারণ ফাস্ট বোলিং ভারতীয় স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। তার ৩১ রানে তিন উইকেট শিকারের কারণে বিশ্বকাপে ১৩ বারের প্রচেষ্টায় প্রথম ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় লাভ করেছে পাকিস্তান। এমনকি শাহিনের শিকার হয়ে মাঠ থেকে বিদায় নেয়া ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিও এই বোলারের প্রশংসা করেছেন। যদিও ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে পরাজিত হয়েছে ভারত।

কোহলি বলেন, 'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন বলে উইকেট নিতে হলে আপনাকে বলের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। যেটি সে (আফ্রিদি) করেছে। সে নতুন বলেই আমাদের ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলে দিয়েছে।'

অসাধারণ একটি ইয়র্কার বল দিয়ে সে রোহিত শর্মাকে ব্যাকফুটে গিয়ে ব্যাট চালাতে বাধ্য করেন এবং এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। আরকেটি বল সুইপ করে ভেঙ্গে দেয় লোকেশ রাহুলের উইকেট। অথচ টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে গড় রানে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া এই ক্রিকেটারের ষ্টাম্প ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনা বিরল। নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে কোহলিকেও ফিরিয়ে দেন শাহিন আফ্রিদি। 

পাক-আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার পাসে  বড় হওয়া আট ভাইয়ের একজন শাহিন। তার আরেক ভাই রিয়াজ পাকিস্তানের হয়ে একটি টেস্ট খেলেই এই ফাস্ট বোলারকে অনুপ্রানীত করেছেন। টেপ বল খেলে উঠে আসা শাহিনকেও আর পেছনে ফিরতে হয়নি। আইসিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শাহিন বলেন, 'সে (রিয়াজ) টেলিফোনে সব সময় আমার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সফরে গেলেও এর ব্যতিক্রম হয় না। আসলে সেই আমার প্রথম কোচ।'

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে অভিষেক ঘটে শাহিন আফ্রিদির। যদিও ম্যাচটিতে হেরে যায় পাকিস্তান। তবে এ পর্যন্ত ১৯টি টেস্টে ৭৬ উইকেট শিকার করেছেন শাহিন। যার গড় ২৫ এর বেশি। তবে সেরা সফলতা পেয়েছেন এই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৯৪ রানে তার শিকার ১০ উইকেট! সব ফরম্যাটেই সেরা দক্ষতা প্রদর্শনকারী এই পাকিস্তানি পেসার ২০১৯ সালে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন।