মাদ্রাসায় ৭টি পদে নিয়োগে ৭০ লাখ টাকা ঘুস
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রায় ৭০ লাখ টাকা ঘুস ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বাতিলকৃত নিয়োগ পুনঃবহালের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
রোববার বেলা ১১টায় কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌহিদুর রহমান (সিআইপি) মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দৌলতপুর আদর্শ গ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. অহিদুজ্জামান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এক সময় ছালেহিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মাওলানা মরহুম আবদুর রউফ। তার মৃত্যুর পর অধ্যক্ষ, নৈশপ্রহরীসহ ৭টি পদ শূন্য হয়। এই ৭টি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনেকের কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে; যারা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
নিয়ামানুযায়ী মূল কমিটি গঠনের জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি তৎকালীন প্রভাবশালীদের ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মনঃপূত না হওয়ায় পুনরায় অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দায়িত্ব দেওয়া হয় কলাপাড়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরকে। শুরু হয় ৭টি পদে নিয়োগের জন্য দুর্নীতি ও ঘুস বাণিজ্যের পরিকল্পনা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ঘুস ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডিজি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন।
এ নির্দেশনার পর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি কমিটি, শিক্ষক, দাতা ও এলাকাবাসীর সম্মতিক্রমে মাদ্রাসা অফিস কক্ষে মিটিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে একটি রেজুলেশন করা হয়। ওই রেজুলেশনে নিরাপত্তা প্রহরী আল আমিনের বাবা হাফেজ সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষর করেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৬ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে স্ব-স্ব পদ থেকে চাকরিপ্রাপ্তরা তাদের পদত্যাগপত্র দাখিল করেন; যা ম্যানেজিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ২২ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ বাতিল সম্পন্ন হয়েছে বলে মহাপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বর্তমানে পদত্যাগ করা প্রার্থীরা ওই ঘুস ও দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ পুন:বহাল করার জন্য মাদ্রাসা অধিদপ্তরে একটি আবেদন দাখিল করেছেন। যে কারণে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘুস বাণিজ্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের করেন।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন- সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক ফরুকি, দৌলতপুর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. তৈয়বুর রহমান, গোলাম মাওলা, দৌলতপুর আদর্শ গ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফারুক খান, কলাপাড়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শামসুল আলম, মেজবাহ উদ্দিন মান্নু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম মোশারফ হোসেন মিন্টু, অমল মুখার্জীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা।
এ বিষয়ে দৌলতপুর ছালেহিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মোস্তাাফিজুর রহমান বলেন, ঘুসের টাকার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।
কমেন্ট