গাজীপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জবির হোসেন শিহান খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে পাঁচজন সিএনজি ও তাকওয়া পরিবহনের চালক এবং সহকারী। অপরজন চায়ের দোকানের নামে চোরাই মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় করেন।

নিহত তাজবির হোসেন শিহান মৌচাক জামতলা এলাকার তানভীর হোসেন নান্নু মিয়ার ছেলে। তিনি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি উত্তরার একটি কল সেন্টারে চাকরি করতেন।

 
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ঢাকায় যাওয়ার পথে উপজেলার মৌচাক এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাজবির হোসেন শিহানকে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তাকওয়া পরিবহনের চালক ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলার আমগাছীহান্দা গ্রামের হালিমউদ্দিন সরওয়ার হোসেন (২৮), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম রৌমারি উপজেলার কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আলী আজগরের ছেলে নাজিম উদ্দিন (৩৫), সিএনজি চালক কুড়িগ্রাম ওলিপুর থানার মধুপুর গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ফুল ইসলাম (৪২), আজমেরি বাসের হেলপার লক্ষ্মীপুর সদরের জামেরতলী গ্রামের মালেকের ছেলে জুয়েল (২৪), তাকওয়া বাসের স্টাফ জয়পুরহাটের মোহনপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে মো. মিলন (২৭) ও চায়ের দোকানদার ভোলার চরফ্যাশনের সুলতান বয়াতির ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫)।

 
আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রবিউল ইসলাম জানান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্সে  অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহান মৌচাক হানিফ স্পিনিং মিলের সামনে গত বৃহস্পতিবার ভোরে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা নিহতের হাঁটুতে ছুরিকাঘাত করে তার মোবাইল ফোন, স্টুডেন্ট কার্ড, ভিসা কার্ডসহ মানিব্যাগ ও হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। পরে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় একটি মামলা হলে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান শুরু করে।

 
তিনি আরো জানান, পুলিশ প্রথমে চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে আটক করে নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্য আসামিদের সনাক্ত করা হয়। এরপর সোমবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর সালনা, কোনাবাড়ী, বাসন ও টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।