নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
বেনাপোলে লক্ষ্যের চেয়ে কম রাজস্ব আহরণ
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আহরণের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বেনাপোল কাস্টম হাউজ। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেয়া ৯৯৬ কোটি ১১ লাখ টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৯৭৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ হিসাবে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বেনাপোল স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ছিল ৩১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৬৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগস্টে ৩৩৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার রাজস্ব। এ হিসাব অনুযায়ী, প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আহরণে উদ্বৃত্ত দেখা গেছে বেনাপোল স্থলবন্দরে।
কিন্তু সেপ্টেম্বরে এসে চিত্রটি পাল্টে যায়। অর্থবছরের তৃতীয় মাসে লক্ষ্য পূরণ হয়নি, উল্টো ঘাটতি দেখা গেছে। এ সময়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ছিল ৩৪৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। বিপরীতে আয় হয়েছে ২৬৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
কিন্তু লক্ষ্য পূরণে এ ব্যর্থতা কেন? ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রাজস্বের পরিমাণ বাড়াতে গিয়ে বেনাপোল কাস্টমসে আমদানিকৃত সব পণ্যের শুল্কমূল্য কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি নানামুখী হয়রানির ফলে আমদানিকারকরা বেনাপোল ছেড়ে অন্যান্য স্থলবন্দরমুখী হচ্ছেন। এসব কারণে বেনাপোলে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস-বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন জানান, মূলত আমদানি কমে যাওয়ার কারণে রাজস্ব আহরণে এর প্রভাব পড়েছে। বেনাপোল কাস্টম কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করেই আমদানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য বাড়িয়েছেন ও ইচ্ছামতো এইচএস কোডে পরিবর্তন এনেছেন। এ কারণে আমদানিকারকরা বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ বন্দর ছেড়ে তারা অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আগে প্রতিদিন ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো। বন্দর ও কাস্টমস ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হলেও এখন আমদানির পরিমাণ কমে এসেছে। বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে। যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি ও আমদানিকারক মিজানুর রহমান খান জানান, ঈদুল আজহা ও ভারতে জিএসটি চালুর কারণে অনেকে সেপ্টেম্বরে পণ্য আমদানি করেননি। এর কারণে রাজস্ব আহরণ কমে যেতে পারে।
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. শওকাত হোসেন বলেন, আগে এ স্থলবন্দরে শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটত। কিন্তু এখন সে সুযোগ নেই। সেপ্টেম্বরে রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে ঈদুল আজহা ও ভারতে দুর্গাপূজার ছুটির কারণে। আশা করছি, সামনের মাসগুলোয় এ ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।
কমেন্ট