দেশে ৩৩ হাজার ৬৪৮ জন বিদেশি অবৈধভাবে বাস করছেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অনিয়মের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে : সিইসি
‘সঠিক তথ্যে ভোটার হবো, নির্বাচনে ভোট দিব’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সময় সব অনিয়মের বিরুদ্ধে জনগণকে সামাজিক ও জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।
আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে সাভার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি উদ্বোধনের সময় তিনি আহ্বান জানান। এ সময় নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন জানান, এই কমিশন রঙবিহীন, চেহারাহীন। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে নির্বাচন কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। স্বচ্ছ ও শুদ্ধ ভোটার তালিকা মাঠকর্মীদের সচেতনতার ওপর নির্ভর করবে। ভোটার তালিকায় যাতে কোনো অসততা, অনীহার অভিযোগ না আসে কর্মকর্তাদের এমন পরামর্শও দেন তিনি।
সিইসি আরো জানান, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগ হাতছাড়া হলে আবার কবে হবে সেটা জানিনা। সঠিক ভোটার তালিকা করতে না পারলে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে না। যেদিন ভয়ভীতি ছাড়া মুক্ত হয়ে ভোট দিতে পারবে সেদিন অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কাজ নির্বাচন কমিশনের। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ ভোটার হালনাগাদ। যেদিন ভোটাররা নির্ভয়ে নিজের ভোট দিতে পারবেন পছন্দের প্রার্থীকে, সেদিনই ভোটের অধিকার ফিরে পাবে এ দেশের জনগণ। সেইসঙ্গে ভোটের অধিকার রক্ষায় এবং সব অনিয়মের বিরুদ্ধে জনগণকে সামাজিক ও জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান এ এম এম নাসির উদ্দিন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইসি। অনিয়ম, অসততা, অসচেতনতা থেকে দূরে থাকতে হালনাগাদকারীদের সতর্ক থাকতে হবে। নির্ভয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে তথ্য সংগ্রহকারীদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের আমানতের খেয়ানত না করার আহ্বান জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রয়োজন। এই কাজের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, মানুষের অনিহা থাকবে না ভোটের প্রতি। কমিশন দায়বন্ধ সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে।
ইসির নির্বাচন প্রস্তুতির প্রথম ধাপ হলো ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণ। এরই মধ্যে পুরোদমে শুরু করেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। ইসি সূত্রে জানা গেছে, ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের এই কার্যক্রম। এবার যাদের জন্ম ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে তাদের তথ্যসংগ্রহ করা হবে।
নিবন্ধন কেন্দ্রেই নাগরিকদের বায়োমেট্রিক গ্রহণের কাজ সম্পন্ন করা হবে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। উপজেলা বা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন গ্রহণ, মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেয়া এবং নতুন ভোটারের ডাটা আপলোড করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
আইন অনুযায়ী, এসব নতুন ভোটারের তথ্য আগামী ২০২৬ সালের ২ জানুয়ারি তালিকায় যুক্ত হবে। এরপর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আগামী বছরের ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করবে ইসি। এর আগে গত ২ জানুয়ারি চলতি বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ নতুন ভোটার। সব মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছেন, ওই তালিকায় তাদের যুক্ত করা হয়েছে।
কমেন্ট