ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতিতে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা

 ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতিতে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা

বিভিন্ন ক্যাডারের ১২ কর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আজ কর্মবিরতি পালন করছেন ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। এদিন বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন দপ্তরের সামনে কালো ব্যাচ পরে অবস্থান নেন কর্মকর্তারা। এ সময় মাধ্যমিক  ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) প্রাঙ্গণে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা অবস্থান নেন। শিক্ষা ক্যাডারের শীর্ষ পদের কর্মকর্তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানও এতে অংশ নেন।

কর্মকর্তাদের সংখ্যার দিক দিয়ে অন্যতম বড় ক্যাডার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। 
এর আগে গত শনিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি তথ্য সার্ভিসের সম্মেলনকক্ষে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও সেবামূলক রাষ্ট্র গঠনে করণীয় বিষয়ে আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময়সভায় এই কর্মবিরতির কথা জানান আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান। বৈষম্যবিরোধী অবসরপ্রাপ্ত ২৫ ক্যাডার সমন্বয় পরিষদ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

তিনি জানান, ফেসবুকে লেখালেখির মতো তুচ্ছ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আহবান করা হয়েছে।

অথচ জনদাবিকে উপেক্ষা করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে ক্ষমতাধর একটি গোষ্ঠীর নিরঙ্কুশ ক্ষমতা আরো বৃদ্ধির প্রয়াস লক্ষ করা গেছে। এই রিপোর্ট পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরো শক্তিশালী হবে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডারবহির্ভূত করার প্রস্তাব থেকে সরে এসে সুকৌশলে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে, যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করা যায়। এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয় সংস্কার প্রস্তাবে না রাখা এবং পরিসংখ্যান ক্যাডারকে অযৌক্তিকভাবে সার্ভিসের বহির্ভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এসব সেক্টরে মেধাবীরা কম আকৃষ্ট হবেন এবং এসব সেক্টর মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।

প্রবন্ধে বলা হয়, কোনো ব্যক্তির মেধা যাচাইয়ের অন্যতম মাপকাঠি হচ্ছে গাণিতিক দক্ষতা। অথচ গণিত বাদ দিয়ে অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে মুখস্থ করার প্রবণতাকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, যা যথাযথভাবে মেধার মূল্যায়নের অন্তরায়। এ ছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, বাস্তবতা বিবর্জিত প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থার প্রস্তাব জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের অন্তরায়।

সভায় পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য আগের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিলসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আবারও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে: ইসি সানাউল্লাহ
পরবর্তী

আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আবারও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে: ইসি সানাউল্লাহ

কমেন্ট