পরিবেশবান্ধব বাজারের ব্যাগ পরিষ্কার ও পুনর্ব্যবহারের উপায়
অন্তর্বর্তী সরকারের পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের কোনো সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ রাখা যাবে না। এর পরিবর্তে পাট বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এদিকে সুপারশপগুলোর পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, ক্রেতারা যেন নিজস্ব ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন। নিত্যদিনের বাজার-সদাই এসব ব্যাগে বহন করলেও অনেকে ভাবছেন, মাছ-মাংসের বাজার কিভাবে হবে?
বাজার-সদাইয়ের বিকল্প ব্যাগের খোঁজ নিয়েছেন অলকানন্দা রায়।
চলুন জেনে নিই কিভাবে পলিথিনের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার করা যায় এবং কোন ব্যাগ কিভাবে পরিষ্কার ও পুনর্ব্যবহার করা যায়।
১. পাটের ব্যাগ মজবুত, দীর্ঘস্থায়ী এবং বহুবার ব্যবহার করা যায়। শুকনা পণ্য, শাক-সবজি, ফলমূল পাটের ব্যাগে সহজেই বহন করা যায়। পাটের ব্যাগ পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ দিয়ে ভালোমতো ঝেড়ে ফেললেই হয়।
ব্যাগে দাগ লাগলে হালকা গরম পানিতে ডিটারজেন্ট অথবা বেকিং সোডা মিশিয়ে টুথব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে পারেন। তারপর রোদে শুকিয়ে নিলেই ব্যাগটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠবে।
২. সোনালি ব্যাগ বাংলাদেশের বিজ্ঞানী মোবারক আহমদ খান পাট থেকে তৈরি করেছেন সোনালি ব্যাগ। এটি এক প্রকারের বায়ো ডিগ্রেডেবল পলিথিন।
সোনালি ব্যাগ ভিজলে নষ্ট হয় না বা ছিঁড়ে যায় না। তাই মাছ, মাংস বহন করা যায়। এই ব্যাগ দ্রুত মাটির সঙ্গে মিশে যায়, তাই ব্যবহারের পর ফেলে দিলেও পরিবেশের ক্ষতি হয় না।
৩. হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি হাতে বোনা ঝুড়ি কিংবা ব্যাগ দেখতে সুন্দর ও টেকসই। নিত্যদিনের যেকোনো কেনাকাটার জন্য হাতলওয়ালা হোগলাপাতার ঝুড়ি বেশ উপযোগী।
বেতের ঝুড়ির মতোই হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি ব্যাগ বা ঝুড়িও পরিষ্কার করা খুব সহজ। সাবান আর পানি দিয়ে ধুয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যায়।
৪. আজকাল বাজার করার জন্য অনেক রকম বাহারি নকশা করা ক্যানভাস কাপড়ের ব্যাগ পাওয়া যায়। শুকনা পণ্যের পাশাপাশি কাঁচাবাজার বহনের ক্ষেত্রেও এসব ব্যাগ উপযোগী। ভালোভাবে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিলে একটা ব্যাগ অনেক দিন ব্যবহার করা যায়।
৫. চাল, ডাল, গুঁড়া মসলা বা শুকনা খাবার রাখার জন্য কাগজের ব্যাগ উপযুক্ত। কাগজের ব্যাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য, তবে বৃষ্টির দিনে কেনাকাটার জন্য উপযোগী নয়।
৬. সবজির উচ্ছিষ্ট দিয়ে পলকা নামের একটি ফ্যাব্রিক তৈরি করেছে শালবৃক্ষ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে এই ব্যাগ বেশ টেকসই ও কার্যকর। এটি মাছ বা মাংসের মতো ভেজা পণ্য বহনেও সক্ষম। পলকা ব্যাগ ধুয়ে পুনরায় চারবার ব্যবহার করা যায়। এটি মাটিতে মিশে যায়, তাই পরিবেশবান্ধবও।
৭. হাতলওয়ালা বেতের ঝুড়িতে শুকনা পণ্য থেকে শুরু করে কাঁচাবাজার, মাছ, মাংস সবই বহন করতে পারেন। এ ধরনের ঝুড়ি যেমন পরিবেশবান্ধব তেমনি দেখতেও সুন্দর। বেতের ঝুড়ির আরো একটি বড় সুবিধা হলো, এগুলো খুব সহজেই পরিষ্কার করা যায়। নিয়মিত ব্যবহারের পর সাবান মেশানো পানি দিয়ে ধুয়ে ঝুড়িগুলো আবার ব্যবহার করা যায়।
বাজারের কেনা ব্যাগ পছন্দ না হলে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই ব্যাগ। ঘরে থাকা পুরনো জিন্সের প্যান্ট বা কাপড় দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন ব্যাগ।
ccc
কমেন্ট