হারতে হারতে জয় পেল বাংলাদেশ
সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ১০ রান। উইকেটে ছিল রোভমান পাওয়েল। তৃতীয় বলে তাকে ফেরালে হালে পানি পায় বাংলাদেশ।
১৯.৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪০ রানে অলআউট হলে ৭ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। এ জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল টাইগাররা।
৬১ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিলো বাংলাদেশ। এক সময় মনে হচ্ছিল জয়টা সময়ের ব্যাপার।
এরপর বদলে যায় চিত্র। অষ্টম উইকেটে দারুণ জুটি গড়ে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন রোভমান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড। তবে ম্যাচের ১৮ তম ওভারে তাসকিন শেফার্ডকে ফেরালে জুটি ভাঙে। শেষ ওভারে হাসান মাহমুদ পাওয়েল ও আলজারি জোসেফকে ফেরালে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের দেয়া ১৪৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ব্র্যান্ডন কিংকে আউট করে শুরুটা করেন তাসকিন। পরের ওভারে শেখ মেহেদী নিকোলাস পুরানকে আউট করলে ২ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে ক্যারিবিয়রা।
তানজিম সাকিবের করা চতুর্থ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তোলে ২৫ রান। এর মধ্যে তানজিমের টানা তিন বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন।
অবশ্য তাকে উইকেটে থিতু হতে দেননি মেহেদী। তাকে মিড অফে হাসান মাহমুদের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন তিনি। ফলে ১২ বলে ২০ রানের ইনিংস শেষ হয় চার্লসের।
রানের খাতা খোলার আগেই আন্দ্রে ফ্লেচারকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় শিকার করেন তিনি। এক বল পরেই ৭ রান করা চেজ কট বিহাইন্ড হয়েছেন। ফলে ৩৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ক্যারিবীয়রা। ক্যারিবীয়দের বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন পাওয়েল ও গুড়াকেশ মোতি। তবে এই জুটিকে বড় হতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব। এই পেসারের ব্যাক অব দ্য লেন্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৬ রান করা মোতি। ফলে ৫৯ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আকিল হোসেনকে আউট করেছেন রিশাদ হোসেন। এক সময় ১১.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ৬১ রান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেখান থেকে টেনে তুলেন পাওয়েল ও শেফার্ড। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পাওয়েল। ১৮তম ওভারে এসে প্রথম বলেই ২২ রান করা শেফার্ডকে আউট করেন তাসকিন। আর তাতেই পাওয়েলের সঙ্গে তার জুটি ভেঙেছে ৬৭ রানের।
শেষ ওভারে জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন আলজারি জোসেফ। প্রথম বলে ওয়াইড লং অনে ঠেলে সিঙ্গেল নেন তিনি। এরপর স্ট্রাইকে আসেন দারুণ খেলতে থাকা পাওয়েল। হাসান মাহমুদের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। তৃতীয় বলে হাসানের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৩৫ বলে ৬০ রান করা পাওয়েল। চতুর্থ বলে বাই থেকে আসে এক রান। আর পঞ্চম বলে আলজারিকে বোল্ড করে ক্যারিবীয়দের ইনিংস ১৪০ রানে গুঁড়িয়ে দেন হাসান। বাংলাদেশ জয় পায় ৭ রানের।
দারুণ এই জয়ে অবদান কয়েকজনের। বড় অবদান শেখ মেহেদী হাসানের। ব্যাট হাতে ২৬ করার পর বল করতে এসে ক্যারিয়ার সেরা নৈপুণ্য দেখান তিনি। ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।
এর আগে দলকে ১৪৭ রানের পুঁজি এনে দিতে ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৪৩ করেন সৌম্য সরকার। জাকের আলি অনিক ২৭ বলে করেন ২৭। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। মাত্র ১৩ বলে তিনি করেন ২৭ রান।
এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ক্যারিবিয়ান দ্বিপপুঞ্জে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো বাংলাদেশ। এর আগে দলটির বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়।
কমেন্ট