ফেসবুকের এক দিনে দাম কমেছে ২৩ হাজার কোটি ডলার

ফেসবুকের  এক দিনে দাম কমেছে ২৩ হাজার কোটি ডলার

ফেসবুকের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা কম্পানির শেয়ারের দাম গত বৃহস্পতিবার বিপুল পরিমাণে হ্রাস পায়। হ্রাসের আর্থিক অঙ্কটা অবিশ্বাস্য ধরনের, ২৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। শেয়ারবাজারে কোনো মার্কিন কম্পানির দৈনিক দরপতনে এটা রেকর্ড বলে জানায় বিবিসি।

মেটার ত্রৈমাসিক হিসাব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম ২৬.৪ শতাংশ কমে যায়।

শেয়ারবাজারে মেটার বড় দরপতনের মধ্য দিয়ে এর মালিক ধনকুবের মার্ক জাকারবার্গের সম্পদের পরিমাণও কমে গেছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ারস ইনডেক্স বলছে, মেটার শেয়ারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ তিন হাজার ১০০ কোটি ডলার কমে গেছে। এই অঙ্কটা পূর্ব ইউরোপীয় দেশ এস্তোনিয়ার বার্ষিক জিডিপির সমান। এতটা ক্ষতির পরও অবশ্য জাকারবার্গ ৯ হাজার কোটি ডলারের সম্পদের মালিক। অর্থাৎ তিনি এখনো বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি।

এর মধ্যে মেটা আরো জানায়, ফেসবুকের দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর (ডিএইউ) সংখ্যা ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কমেছে।

মেটা তথা ফেসবুকের এমন পরিস্থিতি সামনে আসার আগে গত ডিসেম্বরের শেষে জানানো হয়েছিল, আগের প্রান্তিকের তুলনায় গত তিন মাসে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৯৩ কোটি থেকে ১৯২ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে। বিশ্বের বৃহত্তম এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রতিকূলতায় পড়েছে।

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে শেয়ারবাজারে মেটার দরপতন দেখা দিল। বিজ্ঞাপনদাতাদের খরচ সীমিত করার পরিপ্রেক্ষিতে টিকটক ও ইউটিউবের মতো বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের মুখে দাঁড়িয়ে ফেসবুকের লভ্যাংশ হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে সতর্কবার্তা দেয় মেটা কম্পানি। এ অবস্থায় জাকারবার্গ বলেন, গ্রাহক বিশেষ করে, তরুণরা প্রতিদ্বন্দ্বীদের দিকে ঝুঁকে পড়ায় তাঁর প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মেটা কম্পানি এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে দুই হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ৯০০ ডলার লভ্যাংশের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাসের তুলনায় কম।

চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট বাইটডান্সের মালিকানাধীন টিকটকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ফেসবুক ভিডিওসেবা চালু করেছে। তবে এই খাত থেকে আসা লভ্যাংশ ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের প্রথাগত আয় থেকে কম। ফেসবুক আয় কমে গিয়ে সমস্যার ঘূর্ণিপাকের কবলে পড়েছে। গত বছর বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল তাদের অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি পলিসি কার্যকর করে। এতে মেটাসহ অন্য কম্পানিগুলো ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে কি না, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এটি ফেসবুকের ব্যবসার জন্য বিরাট সমস্যা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো বিভিন্ন কম্পানির কাছে বিক্রি করাই ফেসবুকের আয়ের বড় উৎস।

ত্রৈমাসিক হিসাবে দেখা যায়, বিজ্ঞাপন খাত থেকে ফেসবুকের আয় কমে যাওয়ার জন্য গ্রাহকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা অংশত কাজ করেছে।

জাকারবার্গের মেটা বর্তমানে গুগলের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডিজিটাল বিজ্ঞাপনী প্ল্যাটফরম। বলা হচ্ছে, অ্যাপলের অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি অন্যদের তুলনায় মেটার ওপর বেশি প্রভাব ফেলেছে। ডিবিএস ব্যাংকের টেলিকম ও ইন্টারনেট সেক্টরের গবেষণার প্রধান শচীন মিত্তাল জানান, এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্ন্যাপ ভালো করছে। তিনি বলেন, সমগ্র টেক সেক্টরে নেতিবাচক পরিস্থিতিতেও বিজ্ঞাপনের ওপর কম নির্ভরতা ও অ্যাপলের পরিবর্তনগুলো মোকাবেলা করে এখনো ভালো করা যায়।

শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ ভাইবারের পরবর্তী

শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ ভাইবারের

কমেন্ট