‘আত্মসমর্পণ বা অনাহার’ নীতি নিয়েছে ইসরাইল?

‘আত্মসমর্পণ বা অনাহার’ নীতি নিয়েছে ইসরাইল?

উত্তর গাজার জাবালিয়াতে ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে বিপর্যয়কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এর আগেও তারা ইসরাইলের বিমান হামলার পর প্রবল কষ্টের মুখে পড়েছেন। এখন দ্বিতীয় বছরেও তাদের একই অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।

Advertisement

জাতিসংঘ ও ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, এই আক্রমণের মাধ্যমে ইসরাইল তাদের নতুন নীতি রূপায়ণের কাজ শুরু করেছে। এই নীতি হলো, হয় আত্মসমর্পণ, অথবা অনাহার। তারা উত্তর গাজা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দিয়ে পুরো জায়গাটা সিল করে দিতে চায়। ইসরাইল এই পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, ইসরাইলের সেনা উত্তর গাজাকে পুরো বিচ্ছিন্ন করে দিতে চাইছে বলে মনে হচ্ছে।

গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ ফোনে বলেছেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। কেউ বেরোতে পারছে না। তারা আমাদের চলে যেতে বলেছে। কিন্তু হাতে সময় নেই। হঠাৎ তারা পুরো জায়গাটা ঘিরে ধরেছে এবং গুলি চালাতে শুরু করেছে।’ মোহাম্মদ তার পুরো নাম জানাতে চাননি।


৪১ বছর বয়সি মোহাম্মদ বলেছেন, তার স্ত্রী ও তিন সন্তান কাছের শহরে আত্মীয়দের বাড়িতে গিয়েছিল। এরপর ইসরাইলের কামান ও বিমান আক্রমণ শুরু হয়। তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের আসতে মানা করে দিয়েছেন।

জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানেটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্সের হিসাব হলো, গত দুই সপ্তাহে জাবালিয়া থেকে ৫০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। অন্যরা বাড়িতে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ, এখন সেখানে প্রবল লড়াই শুরু হয়েছে।  জাবালিয়ার ৮৪ শতাংশ এলাকা থেকে মানুষকে চলে যেতে বলা হয়েছে।

আত্মসমর্পণ না করলে অনাহার নীতি কি?

বিভিন্ন মিডিয়া, সংস্থা ও ফিলিস্তিনিদের মতে, ইসরাইলের সরকার ক্রমশ আত্মসমর্পণ বা অনাহার নীতি রূপায়ন করছে। এটাই হতে চলেছে উত্তর গাজার জন্য তাদের পরিকল্পনা।

এই পরিকল্পনার জনক হলেন সাবেক এক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং কয়েকজন আমলা। ইসরাইলের মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে সেদেশের মন্ত্রিসভা সম্প্রতি এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছে। বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে কথা হয়েছে। তবে তারা এই নীতি নিয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

এই কৌশলের উদ্দেশ্য হলো হামাস ও তাদের নেতা সিনওয়ারকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করা। সেজন্যই উত্তর গাজার মানুষের ওপর এই চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। পরিকল্পনাটা হলো, উত্তর গাজার বেসামরিক মানুষকে দক্ষিণে যেতে বলা হবে। তারপর উত্তর গাজা সিল করে দেওয়া হবে। যারা উত্তর গাজায় থাকবে, বুঝতে হবে তারা হয় হামাস সদস্য বা তাদের সাহায্যকারী। সেখানে সব সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

তওফিক জানিয়েছেন, তারা আগের থেকেও কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। তারা সমানে বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা পরবর্তী

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের বিমান হামলা

কমেন্ট