জার্মানির নাগরিককে ফাঁসি, ইরানের কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণা
জার্মান সরকার বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই সপ্তাহে ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক জামশিদ শারমাহদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় তারা তিনটি ইরানি কনস্যুলেট বন্ধ করে দিচ্ছে। এই মৃত্যুদণ্ডকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করেছেন।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফ্রাঙ্কফুর্ট, হামবুর্গ এবং মিউনিখে ইরানের কনস্যুলেট বন্ধ হয়ে যাবে। তবে বার্লিনের দূতাবাসের কার্যক্রম ইরান চালাতে পারবে। এ কারণে বার্লিনের বাইরে বসবাসরত ইরানি প্রবাসীদের দুর্ভোগে পড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
নিউইয়র্কে বক্তৃতাকালে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, ‘আমরা বারবার তেহরানের কাছে এটি স্পষ্টভাবে স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, একজন জার্মান নাগরিকের মৃত্যুদণ্ডের গুরুতর পরিণতি হবে।’
জার্মান এই শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির সঙ্গে এই ইস্যুতে তিনি সরাসরি আলোচনা করেছেন।
এর আগে সোমবার শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘোষণার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে কূটনৈতিক প্রতিবাদস্বরূপ কূটনীতিকদের বহিষ্কৃত করে জার্মানি। চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ মৃত্যুদণ্ডের রায়কে ইরানি কর্তৃপক্ষের ‘কেলেঙ্কারি’ বলে অভিহিত করেছে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক আরো বলেন, ‘এটি স্পষ্ট, এই হত্যাকাণ্ডটি মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে ঘটেছে, যা (ইরানের) স্বৈরশাসক, অন্যায় শাসনের দৃষ্টান্ত; তারা স্বাভাবিক কূটনৈতিক যুক্তি অনুসারে কাজ করে না। আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক ইতোমধ্যে সর্বকালের সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে, এটা অকারণে নয়’।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের মতে, ৬৯ বছর বয়সী শারমাহদকে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ‘পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় হয়। পরবর্তীতে ইরানি সুপ্রিম কোর্টও এ সাজা নিশ্চিত করেন। অভিযুক্ত ২০০৮ সালে সিরাজ শহরের একটি মসজিদে বোমা হামলার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য দণ্ডিত হন, যেখানে ১৪ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।
এদিকে শুক্রবার মেহর নিউজ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কনস্যুলার পরিষেবা বন্ধ করায় জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তেহরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মান চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে।
কমেন্ট