বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি
অধিকৃত গোলানে জনসংখ্যা দ্বিগুণ করার উদ্যোগ ইসরাইলের
ইসরাইল সরকার রোববার এক পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে, যাতে সিরিয়ার অধিকৃত গোলান উপত্যকায় জনসংখ্যা দ্বিগুণ করার কথা বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গোলানের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, গোলানের উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন ইসরাইল রাষ্ট্রের শক্তিশালীকরণের অংশ। আমরা একে আরও প্রসারিত ও সমৃদ্ধ করব।
গোলান উপত্যকার ইতিহাস
ইসরাইল ১৯৬৭ সালে ৬ দিনের যুদ্ধে গোলানের বেশিরভাগ অংশ দখল করে নেয়। ১৯৮১ সালে উপত্যকাটি ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে এই সংযুক্তিকরণ স্বীকৃত নয়।
২০১৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোলান উপত্যকায় ইসরাইলের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেন।
তবে সিরিয়া বরাবরই গোলান থেকে ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহার দাবি করেছে, যা ইসরাইল নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। বর্তমানে বিদ্রোহী নেতারা তাদের অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দিলে ইসরাইল এই নতুন পরিস্থিতিকে আরও হুমকিস্বরূপ বলছে।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি আমাদের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ইসরাইলের পরিকল্পনা
ইসরাইল সম্প্রতি গোলানে তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নের জন্য ৪০ মিলিয়নের বেশি শেকেলের (১১ মিলিয়ন ডলার) বাজেট অনুমোদন করেছে।
বর্তমানে গোলান উপত্যকায় ৩১,০০০ ইসরাইলি বসবাস করছে। যারা প্রধানত কৃষি ও পর্যটনে কর্মরত। এছাড়া এই অঞ্চলে ২৪,০০০ দ্রুজ সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করছে। যারা মূলত সিরিয়ান পরিচয়কে অগ্রাধিকার দেয়।
সিরিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি
এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আহমদ আল-শারা (আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি) বলেছেন, ইসরাইল ভুয়া অজুহাত দেখিয়ে সিরিয়ায় আক্রমণ চালাচ্ছে।
শারা আরও বলেন, ‘সিরিয়ার বর্তমান অগ্রাধিকার হলো পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতা। নতুন সংঘাতে জড়ানো থেকে আমরা বিরত থাকব।
আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডান ইসরাইলের গোলান উপত্যকার বাফার জোন দখলের সমালোচনা করেছে। এই পদক্ষেপকে তারা সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ইসরাইলের গোলান উপত্যকা নিয়ে জনসংখ্যা দ্বিগুণ করার উদ্যোগ কেবল বসতি সম্প্রসারণ নয়। এটি একটি কৌশলগত পদক্ষেপ যা সিরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিচ্ছে। তবে এই পদক্ষেপ সিরিয়া ও আরব বিশ্বের সঙ্গে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।
কমেন্ট