দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা সেনা সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
অনুপ্রবেশকারীদের পশ্চিমবঙ্গে ঢোকাচ্ছে বিএসএফ, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতার
পশ্চিমবঙ্গে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রীরা ছাড়া ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার ও অন্য কর্মকর্তারাও বৈঠকে ছিলেন।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে বলেন, মালদহে বিএসএফের সঙ্গে পুলিশ অ্যাডজাস্ট করে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী ঢোকাচ্ছে। তারপর তিনি নিজের এই কথাকে সংশোধন করে বলেন, বিএসএফ অনুপ্রবেশকারী ঢোকাচ্ছে। আর পুলিশ তাদের কিছু বলছে না। সমঝোতা করছে। খবর ডয়চে ভেলের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বলেছেন, রাজীব কুমারের কাছে এ বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য এসেছে। ইসলামপুর, চোপড়া, সিতাই দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকানো হচ্ছে।
কেনো এইভাবে বিএসএফ অনুপ্রবেশকারী ঢোকাচ্ছে, তার একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বাংলাকে বদনাম করার জন্য বিএসএফ-কে দিয়ে কেন্দ্র এ কাজ করাচ্ছে।
তিনি পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ এসব আটকাচ্ছে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও। তিনিই রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন। শুধু এটুকু বলেই ক্ষান্ত হননি মমতা। তিনি রাজ্যের পুলিশ নিয়ে আরও মন্তব্য করেছেন। মালদহে তৃণমূল নেতা খুনের প্রসঙ্গে তিনি আবার বলেছেন, এসপি-কে বলব, এগুলো দেখুন। শুধু কালিয়াচক আর বর্ডার নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না।
সরকারি জমি জবরদখল প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, পুলিশকে বললেও পুলিশ এসব দেখে না!
তিনি একথাও বলেছেন, পুলিশ কিছু নিয়মকে হাতিয়ার করে দায়সারাভাবে কাজ করছে।
অন্য রাজ্যের পুলিশ নিয়ে মমতা
বৈঠকে রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ অভিযোগ করেন, দিল্লি পুলিশ এসে পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে গেছে। তাতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লি পুলিশ কেন এসেছিল? তারা কি রাজ্য পুলিশের অনুমতি নিয়েছিল? অনুমতি ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ এসে এ রাজ্যে যা খুশি তাই করছে কী করে? পুলিশ সুপার কেন রাজ্য পুলিশের ডিজিকে জানাননি?
পুলিশ সূত্র ডিডাব্লিউকে জানিয়েছে, নিয়ম হলো অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ এলে আগে থেকে রাজ্য পুলিশকে নিয়মমাফিক জানাতে হয়। সেই রীতি পালন করেই পুলিশ সাধারণত কাজ করে।
সরকারের ব্যর্থতা দেখছে মমতা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলার পর অনেক প্রশ্ন উঠছে। বিজেপি নেতা সৌরভ শিকদার ডিডাব্লিউকে বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার জন্য পশ্চিমবঙ্গ তো অনেক দিন ধরেই জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য ও আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। তারা সীমান্ত পেরিয়ে আসে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত বা অন্যদের সাহায্য নিয়ে পরিচয়পত্র থেকে পাসপোর্ট হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএসএফের দিকে আঙুল তুলছেন। পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছেন।
সৌরভের মতে, মমতা বলছেন এসপি দায়ী। তাহলে তো তিনিও দায়ী। নিজের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য প্রলাপ বকছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে যতটা চিন্তিত, কাশ্মীর নিয়েও বোধহয় তাদের ততটা চিন্তা করতে হয় না।
তার দাবি, মমতার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করতে হবে। জঙ্গি অনুপ্রবেশ কেন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তাও মনে করেন, পুলিশ যদি ব্যর্থ হয়, কাজ না করে, তাহলে সেই ব্যর্থতার দায় মন্ত্রীর উপরেও বর্তায়। ফলে এইভাবে পুলিশের উপর দায় চাপালেই সব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে না।
কমেন্ট