প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিলেন ৪ সংস্কার কমিশন প্রধান
‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র তালিকা’ থেকে কিউবাকে বাদ দেবে যুক্তরাষ্ট্র
সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র বা সন্ত্রাসের মদদদাতার তালিকা থেকে কিউবাকে প্রত্যাহার করবেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বন্দিমুক্তি চুক্তির অংশ হিসেবে কিউবার ওপর থেকে এই মার্কিন তকমা সরিয়ে নিতে চাচ্ছেন বাইডেন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজ এই কথা জানিয়েছে।
এরপর কিউবা ঘোষণা দেয়, ‘তারা বিভিন্ন অপরাধের জন্য আটক ৫৫৩ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে।
’ আশা করা হচ্ছে, এর মধ্যে চার বছর আগে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২১ সালে কিউবার ওপর সন্ত্রাসী তকমা পুনর্বহাল করেছিলেন, দেশটিতে মার্কিন অর্থনৈতিক সহায়তা এবং অস্ত্র রপ্তানিও নিষিদ্ধ করেন। তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, পরিস্থিতির মূল্যায়নের পর এই তকমা সমর্থন করে এমন ‘কোনো তথ্য’ কিউবার বিরুদ্ধে পাওয়া যায়নি।
কিউবা বলেছে, বাইডেনের পদক্ষেপ সীমিত হলেও সঠিক একটি পদক্ষেপ। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সিদ্ধান্ত জবরদস্তিমূলক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়েছে, যা কিউবার অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এবং জনসংখ্যার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।’ এর কয়েক ঘন্টা পরে একটি পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাথলিক চার্চের মধ্যস্থতায় আলোচনার পর শত শত বন্দিকে ‘ধীরে ধীরে’ মুক্তি দেওয়া হবে। বন্দিদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
এই চুক্তিতে ২০২১ সালে দেশটির অর্থনৈতিক পতনের বিরুদ্ধে কিউবায় বড় সরকার বিরোধী বিক্ষোভের অভিযোগে বন্দি কিছু বিক্ষোভকারীকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং ইরানের পাশাপাশি কিউবাও বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকদের তালিকায় রয়েছে। এর অর্থ হলো, ‘দেশগুলো বারবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে তাদের সমর্থন দিচ্ছে।’
২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কর্তৃক কিউবাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এরপর ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার নেতা নিকোলাস মাদুরোর প্রতি কমিউনিস্ট দেশটির সমর্থনের কথা উল্লেখ করে আবার তালিকায় যোগ করেন কিউবাকে।
সেই সময় কিউবা এই পদক্ষেপকে ‘নিন্দনীয়’, ‘ভণ্ড’ এবং ‘রাজনৈতিক সুবিধাবাদ’ বলে অভিহিত করেছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দিদের মুক্তির পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তটি তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি কিউবা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি পদক্ষেপ হতে পারে। এ ছাড়া এটি অন্যান্য বিতর্কিত বিষয়গুলোতে সংলাপের পথও প্রশস্ত করবে বলে ধরণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কিউবার ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্যও সহায়ক হবে।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাইডেন তার পরিকল্পনা কংগ্রেসকে অবহিত করবেন। যার মধ্যে কিছু কিউবানের ওপর ট্রাম্প-যুগের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাও অন্তর্ভুক্ত। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, তিনি কিউবায় বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির দাবি করার ব্যক্তিদের ক্ষমতাও স্থগিত করবেন।
ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা নিবেন, তবে তিনি ক্ষমতা নেওয়ার পরে সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।
কমেন্ট