জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন পশ্চিমা নেতারা

জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন পশ্চিমা নেতারা

হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে জেলেনস্কি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডার পর পশ্চিমা নেতারা তড়িঘড়ি করে ইউক্রেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে এটা স্পষ্ট, শুক্রবারের উত্তপ্ত বৈঠকের পর ওয়াশিংটন ও তার প্রধান মিত্রদের মধ্যে আরো গভীর ফাটল তৈরি হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের আক্রমণের শিকার হওয়ার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য ইউরোপীয় নেতারা এক লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।

মহাদেশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রেসিডেন্টরা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।


যদিও তারা সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করেননি। তাদের মন্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা কিয়েভের পাশে দাঁড়িয়েছেন। 

এই সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে আসা ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এক্সে একটি পোস্ট করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘একটি আক্রমণকারী দেশ আছে : রাশিয়া।


আক্রমণের মুখে আছে এমন একটি জনগণ : ইউক্রেন।’ 
তিনি আরো বলেছেন, ‘যারা শুরু থেকেই লড়াই করে আসছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা। কারণ তারা তাদের মর্যাদা, স্বাধীনতা, সন্তানদের জন্য এবং ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছেন।’

 
এর আগে ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রকাশের অভিযোগ করেছিলেন।


দুই নেতার মধ্যে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ শোষণের বিষয়ে একটি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জেলেনস্কি চুক্তিতে স্বাক্ষর না করেই হোয়াইট হাউস ত্যাগ করেন। ট্রাম্প আরো বলেন, জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত নন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস এক বিবৃতিতে বলেন, স্পষ্টতই মুক্ত বিশ্বকে এখন নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে জেলেনস্কিকে ‘শক্ত অবস্থান ধরে রাখার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিটানাস নউসেদা বলেন, ইউক্রেন, তোমাদের কখনো একলা চলতে হবে না।


এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গুস ছাখনা সতর্ক করে বলেন, যদি ইউক্রেন লড়াই বন্ধ করে, তবে ‘ইউক্রেন’ বলে কিছু থাকবে না।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইউক্রেনের প্রতি তার দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, রাশিয়া অবৈধভাবে এবং অন্যায্যভাবে ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। তিন বছর ধরে ইউক্রেনের মানুষ সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই করছে। তাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, আমরা যত দিন প্রয়োজন, তত দিন ইউক্রেনের পাশে থাকব। কারণ আমরা এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে একটি লড়াই হিসেবে দেখি। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাকসনও ইউক্রেনের প্রতি তার দেশের ‘অটল সমর্থন’ ঘোষণা করেছেন।

তবে পশ্চিমা ও ইউরোপীয় নেতাদের এই ঐক্যের মধ্যে একটি ব্যতিক্রম ছিলেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, শক্তিশালী নেতারা শান্তি স্থাপন করেন, দুর্বল নেতারা যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। আজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন, যদিও এটি অনেকের জন্য মেনে নেওয়া কঠিন ছিল। ধন্যবাদ, মিস্টার প্রেসিডেন্ট!

পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন করা প্রথম ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আপনি একা নন।’ 

ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা একটি যৌথ পোস্টে জেলেনস্কিকে বলেছেন, ‘আপনার মর্যাদা ইউক্রেনীয় জনগণের সাহসিকতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।’

নজিরবিহীন উত্তপ্ত বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব জেলেনস্কির পরবর্তী

নজিরবিহীন উত্তপ্ত বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব জেলেনস্কির

কমেন্ট